মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বললেই আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিস্টের ‘দোসর’ বলে তকমা দেওয়া, সামাজিক মাধ্যমে হেনস্তা, এমনকি ব্যক্তিগত আক্রমণের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিতর্ক, মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল বা ভাষ্কর্য – এমনকি জাদুঘরের ওপর হামলার মতো বেশ কিছু ঘটনাও ঘটেছে।

    আওয়ামী লীগের শাসনের পতনের পর থেকে দলটির সঙ্গে ‘৭১কে মিলিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধকেই বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে কি না, এমন প্রশ্ন তুলছেন নাগরিক অধিকার নিয়ে সরব ও বিশ্লেষকদের অনেকে।

    সবশেষ ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি আলোচনা সভায় ‘মব’ সৃষ্টি করে যাদের হেনস্তা করা হয়েছে, তাদেরই নানা ধরনের ট্যাগ দেওয়া এবং মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর ঘটনা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

    রাজনীতিকদেরও কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা-আক্রমণের পেছনে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির সংশ্লিষ্টতার কথা বলছেন।

    কিছু ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জামায়াতে ইসলামীর দিকে আঙুল উঠলেও তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

    এদিকে, পাঁচই অগাস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক অনেক স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এই সংখ্যা দেড় হাজারের মতো বলে দুয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

    কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বিষয়ক কোনো তালিকা নেই।

    বরং এই ধরনের ঘটনাগুলোকে ‘সামাজিক প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে দেখছেন সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা।

    মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতির মাঠে যে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা চলছে, সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোরই বড় দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেছেন বিশ্লেষকরা।আরও পড়তে পারেন:

    মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক

    মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি অনুষ্ঠান মব তৈরি করে ভণ্ডুল, আর তারপর মুক্তিযোদ্ধাদের হেনস্তা করার সবশেষ ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে।

    মুক্তিযুদ্ধ আর সংবিধান বিষয়ক এক আলোচনা সভায় অংশ নেওয়ার পর দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা মব তৈরি করে হেনস্তা করা হয় মুক্তিযোদ্ধা লতিফ সিদ্দিকীকে।

    অভিযোগ তোলা হয় যে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী ছিলেন এবং ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’। অথচ ২০১৫ সালেই তাকে দল থেকে বহিষ্কৃত করে আওয়ামী লীগ। জুলাই আন্দোলনের শুরুর দিক থেকেই দেন সরাসরি সমর্থন।

    আয়োজনে উপস্থিত অন্যদেরও দেওয়া হয় আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিস্টের দোসরের মতো নানা ট্যাগ।

    মব সৃষ্টি করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে না দেখা গেলেও, হেনস্তার শিকার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দেওয়া হয় মামলা, নেওয়া হয় কারাগারে।

    শুধু এই ঘটনাই নয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক স্থাপনা বা মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রান্ত হওয়ার বেশ কিছু খবর সামনে এসেছে।

    উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গত বছর ডিসেম্বরে কুমিল্লায় এক মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পরানো হয়, হামলা করা হয় তার বাড়িঘরে।

    একই মাসে হাতিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলা-মামলা প্রত্যাহার করা না হলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

    রাজশাহীতে প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধাকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার আসামি করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়।

    ছবির ক্যাপশান,ভাঙার তালিকায় আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডে অবস্থিত ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ নামের ভাষ্কর্যটিও

    এছাড়াও ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্টের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য, ম্যুরাল, জাদুঘরের মতো স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুরের খবর সামনে এসেছে যার বেশিরভাগই ছিল শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক।

    ভেঙে ফেলা মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক ভাস্কর্যের জায়গায় ঝালকাঠিতে বসানো হয়েছে কোরআনের ভাস্কর্য।

    এমনকি ঢাকার বিজর সরণিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষ্কর্য ভাঙা হলেও বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১’র স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ম্যুরাল–সংবলিত সাতটি দেয়াল কিছুটা অক্ষত ছিল।

    কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে পরে সেটিও ভেঙে ফেলা হয়। একই জায়গায় জুলাই আন্দোলনে নিহতদের জন্য ভাষ্কর্য নির্মাণের খবরও এসেছে গণমাধ্যমে।

    বিবিসি বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল ফলো করতে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

    ছবির ক্যাপশান,১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধ রূপ নিয়েছিল জনযুদ্ধে

    মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে আওয়ামী লীগকে মেলানোর প্রবণতা কেন?

    বিশ্লেষকরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বমূলক অংশগ্রহণ থাকলেও মুক্তিযুদ্ধ সেই দলকে অতিক্রম করে একটি জনযুদ্ধে পরিণত হয়েছিল। ফলে একে একটি দলের বলে বিবেচনা করার সুযোগ নেই।

    তবে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় মুক্তিযুদ্ধের দলীয়করণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধকে “বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে জনবিরোধী অনেক কাজ করেছে”।

    দলটির পতনের পর স্বধীনতাযুদ্ধকে যারা মেনে নিতে পারেনি, তারাই সেই একই বয়ান উৎপাদন করে মূলত মুক্তিযুদ্ধকেই টার্গেট করছে।

    জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “যারা মুক্তিযুদ্ধকে আক্রমণ করতে চায় তাদের জন্য এটা খুব সহজ যে আওয়ামী লীগ বিরোধিতার নামে তারা মুক্তিযুদ্ধকেই খারিজ করে দিতে চায় এবং সেই চেষ্টাই তারা করছে এখন পর্যন্ত”।

    তার মতে, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও তাদের উত্তরসূরিদের “অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয় নাই। সেই কারণে, মুক্তিযুদ্ধকে আক্রমণ করা তাদের প্রতিহিংসার মধ্য থেকে আসে এবং একইসঙ্গে তাদের মতাদর্শিক অবস্থানকে সামনে আরও অগ্রসর করার জন্য তারা একটা রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে এটাকে ব্যবহার করে”।

    অনেকটা একই কথা বলছেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান।

    “যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন এবং সেই সময়ে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছেন, তারাই নতুন বয়ান তৈরি করার চেষ্টা করছেন। একাত্তরে তাদের যে ভূমিকা, যুদ্ধাপরাধ অথবা তারা যে অন্যায়ের সাথে যুক্ত ছিলেন, সে অন্যায়কে মুছে ফেলার জন্য তারা একাত্তরকেই মুছে ফেলার চেষ্টা করছেন,” বলেন তিনি।সম্পর্কিত আরও খবর:

    ছবির ক্যাপশান,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ

    আঙুল উঠছে জামায়াতে ইসলামীর দিকে

    কয়েকদিন আগে ছাত্র জনতার আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বাসার সামনে মব তৈরি করা হয়।

    একইভাবে সামাজিক মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলাপ তুললেই কাউকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা ও ব্যক্তিগত আক্রমণের অভিযোগও শোনা যাচ্ছে।

    এসব ঘটনার পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলছেন অনেক রাজনীতিক ও বিশ্লেষক।

    “অভ্যুত্থানের পরে এন্টিফোর্স যারা থাকে যেমন জামায়াত- যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করছে, দেখা যায় এই ধরনের উগ্রপন্থিদের উত্থান হয়। তারাই আজ এই কাজগুলো করছে”, বিবিসি বাংলাকে বলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

    এর আগে গত মার্চে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “যারা সেদিন (মুক্তিযুদ্ধের সময়) সেই হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করেছে, তারা এখন গলা ফুলিয়ে কথা বলে। ইতিহাস ইতিহাসই। ইতিহাস কেউ বিকৃত করতে পারবে না”।

    অবশ্য অভিযোগগুলো অস্বীকার করছে জামায়াতে ইসলামী।

    দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মতিউর রহমান আকন্দ দাবি করেন, “এটার সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পর্কই নেই”।

    “জামায়াত মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের কখনো বিতর্কিত করার অসম্মানিত করার কোনো কাজ, কথাবার্তায় প্রকাশ করে নাই। জামায়াত এই ধরনের নোংরা রাজনীতি করে না,” বলেন তিনি।

    বরং বিগত ৫৪ বছর যাবত মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা রাজনীতি করেছেন, তারাই মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সবচেয়ে বেশি অসম্মানিত করার চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

    ছবির ক্যাপশান,মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম

    সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

    পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্য, ম্যুরাল ও জাদুঘর ভাঙার খবর আসে, যা পরবর্তী সময়েও কোথাও কোথাও ঘটেছে।

    তবে এই সংখ্যাটা কত তা নিয়ে কোনো তালিকা নেই মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের কাছে। একইসাথে দেশব্যাপী যে অস্থিরতা বিরাজ করছে, তা সবজায়গাতেই দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।

    “সুনির্দিষ্টভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনা” টার্গেট করা হচ্ছে না বলেই মত তার।

    একইসাথে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধকে মিলিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিতর্কিত করার কোনো চেষ্টাও দেখছেন না তিনি।

    “যেখানে যে ধরনের কাজ হয়েছে, সেখানে সে ধরনের সোশ্যাল রিঅ্যাকশন হয়েছে। আমি সেটাকে এভাবেই দেখি”, বলেন মি. আজম।

    উপদেষ্টা দাবি করেন, যে প্রতিষ্ঠানগুলো আওয়ামী লীগ দখল করে দলীয় কার্যক্রম চালিয়েছে কেবল সেখানেই এমন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

    কিন্তু সেই সামাজিক প্রতিক্রিয়া থামাতে সরকার কী উদ্যোগ নিচ্ছে? – প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সমাজ নিজে থেকেই থামবে। সরকার তো আইন করে, জোর করে সামাজিক প্রতিক্রিয়া বন্ধ করতে পারে না”।

    ছবির ক্যাপশান,সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান

    অবশ্য রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত এক বছরে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনায় সরকারের ভূমিকা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে সামনে এসেছে।

    সরকারের অবস্থানকে ‘রহস্যজনক’ উল্লেখ করে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, “সরকারের এই নীরব অবস্থান পালন করার কোনো কারণ নাই। সরকারে যারা আছেন তারা হয়তো ভাবছেন অগাস্ট পরবর্তী সময়ে এই পক্ষটা এত শক্তিশালী, আমরা এদের বাধা দিতে পারবো না। অথবা তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন না”।

    “তাদের সমর্থন করে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির সাথে তারা যুক্ত হয়ে পড়ছেন। এখন তারা জেনেশুনে করছেন নাকি এর মধ্যে গভীর ষড়যন্ত্র আছে, সেটা বের করতে হবে”, বলেন তিনি।

    ছবির ক্যাপশান,মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক আফসান চৌধুরী

    মুক্তিযুদ্ধ কোনো দলের হিসেবে দেখা ‘দুর্ভাগ্যজনক’

    মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা কিংবা মুক্তিযোদ্ধা মাত্রই পাঁচই অগাস্টের অভ্যুত্থানবিরোধী বিবেচনা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ও ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারওয়ার আলী।

    তার মতে, “সশস্ত্র যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেখানে সেক্টর কমান্ডারদের কেউ আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন না কিংবা দলটির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেননি। তবে এটিও সত্য যে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের যে ভাষণ সেটি দ্বারা তারা উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন”।

    “এটি অবশ্যই একটি গণযুদ্ধ ছিল। সুতরাং একে আওয়ামী লীগের ট্যাগ দেওয়াটা অনুচিত। কিন্তু এই বিবেচনাটা রাখতে হবে যে যুদ্ধকালীন যে সরকার ছিল সেটা আওয়ামী লীগের সরকার ছিল”।

    এদিকে মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক এই বিতর্ক একেবারেই রাজনৈতিক পরিসরের মধ্যে সীমাবদ্ধ বলে মনে করছেন মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক আফসান চৌধুরী।

    তিনি বলছেন, “মূলত ইতিহাসচর্চার পরিসর আর রাজনীতির পরিসর এক নয়। তবে আমরা যেহেতু ইতিহাসচর্চাকে রাজণীতিকরন করেছি, আমাদের দেশে যেহেতু হয়েছে, সেহেতু এটা থেকে আর বাঁচা সম্ভব নয়। এটা হবে”।

    “রাজনৈতিক পরিসরে যারা সবল হচ্ছে বা ক্ষমতায় যেতে চায়, টিকে থাকতে চায় – তারা এটা করছে। এটা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাথাব্যথা একেবারেই নেই বা খুব কম”, বলেন তিনি।

    Share.
    Leave A Reply

    Translate »
    Exit mobile version